রাজধানীর গুলশান-বনানী এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্তের পর থেকে চালকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতে বনানী ১১ নম্বর রোড এলাকায় লাঠি দিয়ে বেশ কয়েকজনকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিরুদ্ধে।
ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর দাবিতে তাদের এই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত তাণ্ডবে রুপ নিয়েছে। গতকাল সোমবার আন্দোলন চলাকালে যারা ছবি-ভিডিও ধারণ করেন তাদের ওপর হামলা চালান চালকরা। এমনকি তাদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না সাধারণ বাইকাররা।
বনানী থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গুলশান সোসাইটির নিবন্ধিত রিকশাগুলো গুলশান এলাকার যাত্রী পরিবহন করে থাকে। সম্প্রতি গুলশান এলাকায় ছিনতাই-চাঁদাবাজি ও যানজট বেড়ে গেছে। কারণ, অনিবন্ধিত রিকশার চলাচল বেড়েছে। এ জন্য নিবন্ধিত রিকশা ছাড়া ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু সোসাইটির এ সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি রিকশাচালকরা। তারা গত কয়েকদিন ধরে গুলশানের বিভিন্ন এলাকায় রিকশা চালানোর দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অটোরিকশাচালকরা গুলশান-বনানীর বিভিন্ন সড়কে ও আশপাশের প্রধান সড়কে অবস্থান নেন। কয়েকটি স্থানে প্যাডেলচালিত রিকশা ও বাইক চালকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা এবং ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। এসব ঘটনার কিছু ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযোগ এসেছে, বনানী ২১ নং রোডে দুই জন প্যাডেলচালিত রিকশাচালককে খালের পাশে ফেলে দেয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। এসব ঘটনায় স্থানীয় জনতা ও ব্যবসায়ীদের মাঝেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। তারাও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। গুলশান ও বনানীর কয়েকটি এলাকায় স্থানীয়রা জানান, সকালের দিকে কিছু বিক্ষুব্ধ অটোচালকরা এসে যেখানে প্যাডেলচালিত রিকশারচালকদের দেখছেন তাদের ওপর চড়াও হচ্ছেন। এ সময় আশপাশে থাকা বাইকরা বাধা দিলে তাদের ওপরও চড়াও হন অটোরিকশাচালকরা। তবে চালকদের দাবি, রাজধানীর অন্যান্য এলাকার মতো গুলশান-বনানীতেও তাদের চলাচলের সুযোগ থাকা উচিত। তারা চাইছেন, নিয়মের আওতায় এনে তাদেরকে চলাচলের সুযোগ দেয়া হোক, যাতে কর্মসংস্থানের পথটি বন্ধ না হয়। এসব ঘটনার কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি বিদেশীদের হয়রানি করতেও দেখা গেছে। তবে স্থানীয়রা জানান, এখন পর্যন্ত ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা বেশ কয়েকজন মোটরসাইকেল চালকদের লাঠি দিয়ে মারধর করেছেন। শুধু তাই নয়, বনানী ব্রীজের উপর মোটর রিক্সাওয়ালারা প্যাডেল রিকসা ও কোন বাইককে পাঠাও/উবার সন্দেহ হলেই মারধোর করছে ও ফোন কেড়ে নিচ্ছে। পুলিশ কিছু করছে না। যদিও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে রয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। এছাড়াও অভিযোগ এসেছে, বনানী ২১ নম্বর রোডে দুইজন প্যাডেলচালিত রিকশাচালককে খালের পাশে ফেলে দেয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এসব ঘটনায় স্থানীয় জনতা ও ব্যবসায়ীদের মাঝেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। তারাও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মেহেদী হাসান জানান, ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা বর্তমানে বনানী ১১ নম্বর রোডে অবস্থান করছেন। পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তবে আমরা ঘটনাস্থলে রয়েছি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। যারাই তাদের আন্দোলনের ছবি ও ভিডিও নেয়ার চেষ্টা করছেন তাদের ধাওয়া দিয়ে রিকশাচালকরা লাঠিপেটা করছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল থেকে গুলশানে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করা হয়। এর আগে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট রঙের ও নিবন্ধিত প্যাডেলচালিত রিকশা চলতে পারত গুলশানে। তবে গত কয়েক মাস ধরে বাইরের ব্যাটারিচালিত রিকশা এলাকায় প্রবেশ করতে শুরু করলে যানজট ও বিশৃঙ্খলা বাড়ে বলে স্থানীয়রা জানান। এই প্রেক্ষাপটে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি), গুলশান সোসাইটি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) যৌথভাবে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

* বনানী ব্রিজে পাঠাও-উবার সন্দেহ হলেই করছে মারধর, কেড়ে নিচ্ছে ফোন * রক্ষা পাচ্ছে না বাইকাররা, ছবি তুললেই লাঠিপেটা
রাজধানীতে অটোরিকশা চালকদের তাণ্ডব
- আপলোড সময় : ২১-০৪-২০২৫ ১১:৪৪:৫৫ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২১-০৪-২০২৫ ১১:৪৪:৫৫ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ